ঢাকা,রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

পেকুয়ায় ‘ছেলেধরা’ সন্দেহে বৃদ্ধা নারীর উপর এ কেমন বর্বরতা !

মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া :::

অচেনা ওই মানসিক রোগী বৃদ্ধা মহিলার বয়স হবে আনমুমানিক ৫৫ এর কাছাকাছি। তার বাড়ী-ঘরের ঠিকানাও কেউ দিতে পারছেনা। তার ঠাঁই হয়েছে এখন পেকুয়া সরকারী হাসপাতালের বেডে। আজ ১৬ এপ্রিল দুপুরে পেকুয়া উপজেলার বারাইয়াকাটা গ্রামের একদল চিহ্নিত দূর্বূত্ত ওই অচেনা মানসিক রোগী নারীকে কথিত ‘ছেলেধরা’ সন্দেহে পিঠিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে পেকুয়া থানার এএসআই নাজিরের নেতৃত্বে একদল পুলিশ বারাইয়াকাটা রাস্তার মাথা থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করে। পরে তাকে পেকুয়া হাসপাতালে ভর্তি পডপডপপকরা হয়েছে। পেকুয়া হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, তার শরীরের একাধিক স্থানে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ওই নারী মানসিক ভারসাম্যহীন।

পেকুয়া থানার এএসআই মো. নাজির জানান, বারাইয়াকা এলাকার একদল দূর্বুত্ত ওই নারীকে অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছে। ওই নারী মানষিক প্রতিবন্ধী (পাগল)। ছেলেধরা আখ্যা দিয়ে বারাইয়াকাটার কিছু দূর্বূত্তরা ওই নারীকে বর্বর নির্যাতন চালিয়েছে। তিনি এ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন।

সরেজমিনে বারাইয়াকাটা গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আজ ১৬ এপ্রিল দুপুরে ৫৫ বছর বয়সী এক নারী বারবাকিয়া নোয়াখালী ব্রীজ এলাকা থেকে পায়ে হেটে বারাইয়াকাটা মাদ্রাসার দিকে আসছিলেন। পথিমধ্যে বারবাকিয়া মাদ্রাসা এলাকায় পৌঁছালে স্থানীয় কিছু বখাটে লোক ওই বৃদ্ধা নারীকে ‘ছেলেধরা’ আখ্যা দিয়ে বেধড়ক মারধর শুরু করে। ওই মহিলার পরনের কাপড় পর্যন্ত ও খুঁেল ফেলে জামায়াত-শিবির অধ্যুষিত ওই এলাকার চিহ্নিত বখাটেরা! এসময় ওই নারীকে রশি দিয়ে বেঁধেও অমানবিকভাবে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালানো হয়। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পেকুয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হামলাকারীদের কবল থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করে। এদিকে ওই নারীকে ছেলেধরা আখ্যা দিয়ে নির্যাতন চালানো হলেও ওই এলাকার কার ছেলে ধরে নিয়ে কোথায় নিয়ে যাচ্ছিলেন সে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ কেউ দিতে পারছেনা। স্থানীয়রা ধারনা করছেন, ওই নারীর বাড়ী কুতুবদিয়ার কোন এক ইউনিয়নে হতে পারে। মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় ভবেঘুরে জীবন যাপনসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরাফিরা করে।

বারাইয়াকাটা এলাকার বাসিন্দা ও স্থানীয় ওয়ার্ড়ের ইউপি সদস্য মোস্তাক আহমদ জানান, তিনি খবর পেয়ে ওই মহিলাকে হামলার কবল থেকে রক্ষা করেছেন। তিনি জানান, ছেলে ধরা আখ্যা দিয়ে বারাইয়াকাটা গ্রামের আলমগীরের বখাটে পুত্র শাহাব উদ্দিনের নেতৃত্বে ওই বৃদ্ধা নারীকে বর্বর নির্যাতন চালানো হয়েছে। তিনি এর প্রতিবাদ করলে বখাটে শাহাব উদ্দিন তাকে উল্টো দেখে নেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন।

এ ব্যাপারে জানার জন্য ইউপি চেয়ারম্যান বদিউল আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তিনি ঘটনার সময় এলাকায় ছিলেননা। এ বিষয়ে তিনি খোঁজ খবন নিচ্ছেন বলে জানান।

পেকুয়া থানার ওসি জিয়া মো. মোস্তাফিজ ভূঁইয়া জানান, ওই নারী ছেলেধরা নয়। তাকে অকারনে নির্যাতন করা হয়েছে। ওই নারীর উপর হামলাকারীদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পাঠকের মতামত: